গবেষক হবার উংকাঙ্ক্ষী প্রাতিষ্ঠানিক পক্ষপাতদুষ্ট শহীদ ইকবালের লেখাটি উদ্দেশ্যপ্রনোদিত, সন্দেহ নেই। বাংলাদেশের ছোটো কাগজ আন্দোলন শুরু হয় আশির শুরুতে। প্রধানতম ছোটো কাগজ গাণ্ডীবের মাধ্যমে। এই পত্রিকাটি ঘিরেই এবং সঙ্গে অনিন্দ্য পত্রিকা নিয়ে যে ক’জন কবি-লেখক-চিত্রশিল্প ছোটোকাগজের আন্দোলন শুরু করেন সেলিম মোরশেদ তাদের মধ্য অন্যতম। মোটেও তিনি কোনো গোষ্ঠী ভিত্তিক নন। সেই সময় তিনি সমমনা অন্যান্য ছোটো কাগজে লিখেছেন। অনিন্দ্য, চর্যাপদ, তৎকালীন সংবেদ (বর্তমানে না) পরবর্তীকালে দ্রষ্টব্য এবং অই জাতীয় কাগজেও লিখেছেন। শুধু লেখেননি, অধিকাংশ কাগজের রক্তেমাংসে তিনি মিশে আছেন, এক্টিভিস্ট হিসেবেও। এর একযুগ পরে তিনি প্রতিশিল্পের সঙ্গে যুক্ত হন। নিজের লেখালেখির সঙ্গে ছোটোকাগজ বিষয়ক যাবতীয় কথামালা নিয়মিত প্রকাশ করেন। ওই কথামালা একত্রিত করে প্রতিশিল্প-‘পালটা কথার সুত্রমুখ অথবা বুনোশুয়োরের গোঁ’- এইনামে লিটলম্যাগ সংক্রান্ত এই গ্রন্থটি (হ্যান্ডবুক) প্রকাশ করে। গোষ্ঠী ভিত্তিক কথাটা এইজন্যে বলা হয় যেন এন্টিপিপল হিসেবে চিহ্নিত করা যায়- জনবিচ্ছিন্ন করা যায় এই লেখকদের। শহীদ ইকবালের মননে প্রাতিষ্ঠানিক বিকৃতি রয়েছে। কী হলো?
একঃ প্রতিশিল্পকে অবমূল্যায়ন করার জন্যে এই গোষ্ঠীবদ্ধ বলা। অথচ প্রতিশিল্প বাংলাদেশের যেকোনো অপ্রাতিষ্ঠানিক লেখকের লেখা প্রকাশ করে থাকে।
একঃ প্রতিশিল্পকে অবমূল্যায়ন করার জন্যে এই গোষ্ঠীবদ্ধ বলা। অথচ প্রতিশিল্প বাংলাদেশের যেকোনো অপ্রাতিষ্ঠানিক লেখকের লেখা প্রকাশ করে থাকে।
দুইঃ সেলিম মোরশেদকে প্রতিশিল্প গোষ্ঠীর একজন বলার অর্থ হলো-গা-ীবসহ অন্যান্য ছোটোকাগজের সঙ্গে তার সম্পৃক্তাকে অস্বীকার করা। অর্থাৎ ছোটোকাগজ আন্দোলনকে খ-িত করা।
সেলিম মোরশেদ পরবর্তীকালে কবি আহমেদ নকিব এবং লেখক সাগর নীল খানের সঙ্গে একত্রে বাংলাদেশের প্রথম ছোটোকাগজের লেখকদের প্রকাশনী ‘উলুখড়' প্রতিষ্ঠা করেন। ছোটোকাগজ সম্পর্কিত তথ্য ধারণা পেতে হলে ওই প্রকাশনী থেকে ‘স্বপ্নের সারসেরা’ নামে চারশো পৃষ্ঠার একটি গ্রন্থ আছে। গবেষণাধর্মী গ্রন্থটি পড়লে গবেষণা সংক্রান্ত ধারণা পোক্ত হবে। কথিত প্রতিষ্ঠানের চেয়ারে বসে একটা জরুরী ডিসকোর্সের গ্রন্থকে গল্পগ্রন্থ বলা, এটা কিসের ‘চিহ্ন'?
আমরা যারা সেলিম মোরশেদের পাঠক, যারা তার লেখাকে ছোটোকাগজ উপযোগিতার আদর্শ মনে করি, এই ধরণের হীনকাজকে তীব্রভাবে ঘৃণাসহ প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শুধু তাই না সেলিম মোরশেদ এর লেখা নিয়েও সর্বচ্চো আলোচিত লেখা ‘কাটা সাপের মুণ্ডু’ নিয়ে তিনি একই রকম দায়িত্বহীন মনোবৃত্তির পরিচয় দিয়েছেন। এব্যাপারে ফেসবুকে দ্রষ্টব্য ও করাতকলের সতীর্থ লেখক মাহমুদুল হাসান মাছুমের শণাক্ত করাটা তুলে ধরছি ‘...প্যারায় প্যারায় অসাধুতার চিহ্ন, কারণ গল্পটির বিষয়বস্তু হলো বেঁচে থাকার জন্যে সাপ খেয়ে উদর পূর্তিকরা, লড়াইটা হচ্ছে ক্ষুধা নিবৃত্তির সঙ্গে। যারা এই লেখাটি পড়েছেন তারা সকলেই জানেন এটা জীবন যুদ্ধের গল্প। আখ্যানে কোথাও কোনো যৌনতার উপাদান নেই। অথচ শহীদ ইকবাল লিখেছেন এটা যৌন জীবনের গল্প। অর্থাৎ গল্পটিকে লড়াইয়ের যায়গা থেকে সরিয়ে নেবার চেষ্টা।
বাদ বাকি আর নাই বলি, পাঠকই বলবেন।’ উল্লেখ না করে পারছিনা যে, যদিও তথ্যটি দেয়া খানিকটা বিব্রতকর, উল্লেখ না করে পারছিনা যে, যদিও তথ্যটি দেয়া খানিকটা বিব্রতকর, তারপরেও আমরা এটাকে কারোর ব্যক্তিগত সফলতার জায়গা থেকে না দেখে লিটলম্যাগাজিনের সামষ্টিক মর্যাদার নূন্যতম সততা বলেই বলছি আশির দশক থেকে কথাসাহিত্যিক সেলিম মোরশেদ এর শক্তিশালি লেখাগুলোকে সবমহেলই এক অজানা কারণে নানান মিসইন্টারপেট করে নানাভাবে সচেতন পাঠকের কাছ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এমনকি তথাকথিত ছোটকাগজের কর্মীগুলো যারা তার আদর্শ বিক্রি করেন তারাও চুপ করে আছেন বলে-বলতে বাধ্য হচ্ছি আমাদের এদেশের সামগ্রীক পরিস্থিতি যখন এরকম, তখন বিগত ২০১১ সালে যাদবপুর ইউনিভার্সিটি, ডিপার্টমেন্ট অব বেঙ্গলীর আন্ডার গ্রাজুয়েট এবং পোস্ট গ্রাজুয়েট কোর্সে দ্বিতীয় সেমিস্টারের সিলেবাসে ‘বাংলাদেশের ছোটগল্প’ অধ্যায়ে সেলিম মোরশেদ এর লেখা মর্যাদার সাথে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। (bangla/pg/2.57: ‘বাংলাদেশের ছোটগল্প’ Publishd by Sri Dr. Pradip Kumar Ghosh,
Register, Jadavpur University. Prof.
Achynto Biswas, Departmental Head, Jadavpur University) আমরা যাদবপুর ইউনিভার্সিটিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আশাকরি চিহ্ন ও তাদের কর্তৃক আয়োজিত লিটলম্যাগমেলা- তদবিষয়ক শিল্পসাহিত্যের নব্য ব্যবসায়িরা এবং অন্যান্য লিটলম্যাগাজিন ব্যবসায়িদের সঙ্গে লবিং করা শিক্ষক এবং অর্ধশিল্পীসম্প্রদায় সাবধানী হবেন এবং যেখানে হাত যাবে না সেখানে চুলকাতে যাবেন না।
ロ শাফি সমুদ্র
ロ শাফি সমুদ্র