আস্তিনে গোটানো জীবনের প্রতিচিত্র আঁকতে আঁকতে কবি আউয়াল আহমদ প্রবাহমান ভাষার আধিপত্যে তার প্রথম কবিতার বই ‘সদ্যপুরাণ রূপকথা’ প্রস্তুত করেছেন। প্রকাশ ভঙ্গির সম্পুর্ণ স্বাতন্ত্রতা, নান্দনিকতার প্রাচুর্যতা, বৈশ্বিক চিত্র ও চরিত্রের প্রতিপত্তি, কল্পচিত্র ও ভাষার অদৃশ্য সংযোগে কবি লিখেছেন নিস্ফলা জীবনের তামাদি উপখ্যান। দৃশ্যমান অবয়ব থেকে নিজেকে নিয়ে গেছেন দুর্বিনীত অন্ধকারের দিকে, তবু অনিবার্য বোধকে প্রশ্রয় দিয়েছেন তার কবিতায়- ‘অভাবনীয়তার নিকট দায়বদ্ধ নই/ আমাদের ভাবনার শাখা ও প্রশাখা আছে...’।
অপ্রাতিষ্ঠানিক কবি আউয়াল আহমদ স্বভাব শুদ্ধতায় আপদমস্তকই কবি, কবিপ্রানে তিনি বিশ্বাসের পরিক্রমায় কবিতার ভাষা নির্মাণে ভীষণ উদগ্রীব, উপলব্ধির বিন্যাসে মূর্তবিমূর্তের দ্বান্দ্বিক উপস্থাপনে পরিপক্ক এবং স্থাপত্যের এক ভয়ঙ্কর কারিগরী দক্ষতায় তিনি মনোযোগী।
প্রত্যাখ্যান-বিরোধিতায় অবিচল এইকবি সংযুক্ত রয়েছেন প্রতিষ্ঠানবিরোধী ছোটকাগজ ‘দ্রষ্টব্য’ ও ‘করাতকল’ সম্পাদনায়। স্কুল জীবনেই ‘দোলনা’ ও ‘উদগম’ নামে সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদনা কাজে অনুপ্রবেশের পর ‘চালচিত্র’, ‘দ্রষ্টব্য’, ‘করাতকল’ আর ‘পৌনঃপুণিক’ ছোটোকাগজেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। কবিতা ও কথা সাহিত্যে সমান্তরাল অবস্থান রেখে প্রথাবিরুদ্ধ শিল্প-সাহিত্য চর্চার চৈতন্যকে ধারণ করেই আত্নপরিচয়কে ফ্লাপবন্দী করেছেন।
১৯৭৮ খৃীষ্টাব্দে ঠাকুরগাঁও জেলার ধর্মগড় গ্রামে জন্মগ্রহণকারী কবি আউয়াল আহমদ ঠাকুরগাঁয়ের চাখোর, গল্পবাজ মানুষ এবং বাতিঘর ও চালচিত্রের আড্ডাকে তার লেখালেখির অনুপ্রেরণা বলে আমলে রাখেন।