পুরোহীত, অরাজনৈতিক কুকুর এবং তৃতীয়বিশ্বের শেয়ালগণ - শাফি সমুদ্র

সর্বশেষ লেখা

Home Top Ad

প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা কোনো ফ্যাশেনবল বিষয় নয়, যা দিয়ে আপনি নিজের পাছায় একটা সীলমোহর লাগিয়ে ঘুরে বেড়াবেন...

মঙ্গলবার, ৬ মার্চ, ২০১৮

পুরোহীত, অরাজনৈতিক কুকুর এবং তৃতীয়বিশ্বের শেয়ালগণ

মন্দিরের একমাত্র ম্যানেজার হিসাবে দস্যু সর্দারগণ কর্তৃক মনোনীত হইয়াছেন তৃতীয়বিশ্বের অরাজনৈতিক ও নিরামিষ ভোজী একজন কুকুর। 

নানান উপায়ে পাহাড়ের উপর মহাজাতিক মন্দিরটি বহুবছর ধরিয়া নিজেকে টিকিয়া রাখিয়াছেন, যতোটা না ধর্মের তাহার চেয়ে ঢের রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে। নির্বাচনের রাজণৈতিক কারবারী, দুর্বৃত্ত ব্যবসায়ী, সুদের সফল মণীষিসহ নানান ভক্তকূলের অনুগ্রহ মন্দিরের প্রধান আয়ের উৎস। মন্দিরের পুরোহীত এবং কুকুর দু’জনের ভাগবাটোয়ারায় প্রাণ লইয়া  বাঁচিয়া থাকে। উদরপূর্ণ হইলে কুকুর পাহাড়ের মাথায় বসিয়া জাতিসমূহের উদ্দেশ্যে চিৎকার চেঁচামেচি করিয়া নীতিবাক্য বর্ষন করিতে থাকে আর পুরোহীতের ঢঙঢঙ ঘণ্টা ধ্বনীতে উদ্বুদ্ধ হইয়া পাহাড়ের পাদদেশে ঝোঁপে জঙ্গলে শোরগোল করিতে থাকা রাজনৈতিক শেয়ালগুলো নির্বাচনের নানান হিসাব নিকাশ করিতে থাকে। আর তখনই পরাজয়ের নিদারুণ খবর হিলারী কিøন্টনকে তাহার বারান্দায় ধপাস বসিয়া রাখে। বেলা বাড়িতে থাকে। পাতা ঝরিতে থাকে। শীতের কুয়াশা ঘণ হইতে থাকে, বেনে বউ বাড়ির সীমার চৌহদ্দীর উপর দিয়া শূন্য পথের দিকে উঁকি দিয়া দেখিতে থাকে তাহার রসিক বেনে হাঁট হইতে ফিরিতেছে কিনা। পরক্ষণে নির্বাচনে লগ্নীকারক নোবেলধারী পদকজীবি পন্ডিত নিজের চুল ছিড়িতে ছিড়িতে বলিয়া ওঠে-  ‘চুদিরপুত জিততে পারলিনা, আমার সব ঋণের ব্যবসা তো জলে গেলো।’

এই মহামন্দিরটি ইতিহাসের শুরুকাল হইতে মানব সভ্যতার ভিতরেই উজ্ঝ ছিলো। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরে যুদ্ধ এবং ফ্যাসাদ চালু রাখিবার স্বার্থে মন্দিরটি উজ্ঝ থেকে সরূপে প্রকাশিত হইলেন। পরবর্তিতে আন্তরর্জাতিক দূস্যুদের অবকাশ যাপন কেন্দ্র কিংবা বৈঠকখানা হিসাবে নিজের চরিত্র নির্ধারণ করিলেন এবং নিরপেক্ষতার কম্বলে আচ্ছাদিত হইয়া গভীর তন্দ্রাচ্ছন্ন গমণ করিতে করিতে বিশ্ববাসীর জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইলেন যে ভিষ্মের ন্যায় তিনি কখনো নিজের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করিবেন না।

রাজনৈতিক শেয়ালগুলো নির্বাচনে সফল হওয়াতে তারা অনুধাবন করিলেন পৃথিবী ব্যাপী আরো ব্যবসা বিস্তার করিতে হইবে। সে ক্ষেত্রে ব্যবসার নতুন নতুন খাত ও বাজার তৈরির লক্ষ্যে সন্ত্রাসী ইঁদুরগুলোকে নতুন রূপে বাজার তৈরির নিমিত্তে ক্ষমতা ও হাতিয়ারপত্র সহযোগে দুনিয়াজুড়ে ছড়াইয়া দিলেন। তাহাদের প্রতি আদেশ আসিলো- যাও ,জমিনে ছড়াইয়া পড়ো আর সফলতার সহিত যুদ্ধ পরিস্থিতি প্রস্তুত করো। আজ্ঞা লইয়া তাহার ছুটিলো বিপুল উদ্দ্যমে মহাদেশ হইতে মহাদেশে। অতপর মন্দিরে বসিয়া পুরোহীত চলমান কার‌্যাবলির বৈধতার প্রজ্ঞাপন জারি করিলেন।  

আজ্ঞাবাহী ইঁদুরগন দেশে দেশে এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে উপাসনালয়ে আগুন জ্বালাইলো, মানুষ হত্যা করিতে থাকিলো, যত্রতত্র বোমা পাতিয়া রাখিলো, একদলের লোক হত্যা করিয়া তাহার দায়ভার অন্য দলের ঘাড়ে চাপাইলো, তাহারা চা পাতির মর্মার্থ অনুধাবন করাইলো, এইভাবে তাহারা একজাতীর মধ্যে সন্দেহ ও ষড়যন্ত্রের বীজ বুনিয়া প্রত্যেককে প্রত্যেকের শত্রুতে পরিণত করিলো। এইরূপ তারা করিলো একদেশের সহিত আরেক দেশের ক্ষেত্রেও বটে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইঁদুরগুলো খুবই দক্ষতার সহিত তাহাদের কার্যক্রম খুব কম সময়ের ভিতরে সফলতায় উপনীত করিলো, চারিদিকে বড়বড় রণশিঙা-দামামা   দেশেদেশেজাতিতেজাতিতেধর্মেবর্ণে বিপুল আয়তনের যুদ্ধ প্রস্তুতী শুরু হইয়া গেলো। 

এদিকে পাহাড়ের চুড়ায় বসিয়া দস্যূদলের নির্দেশ প্রাপ্ত হইয়া মহান কুকুর হাউমাউ করিয়া কাঁদিতে লাগিলো আর পুরোহিত চ্যাঁও চ্যাঁও করিয়া বলিতে লাগিলো শান্তি শান্তি! কলহ কখনো মঙ্গল ডাকিয়া আনেনা।




ロ শাফি সমুদ্র



Pages